সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। আপাতত তিনি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন। তবে তার কিডনিতে কিছু জটিলতা ও রক্তে ইনফেকশন ধরা পড়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এসব জটিলতা নিয়ন্ত্রণের পর কাদেরের বাইপাস সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান। এর আগে মঙ্গলবার সকালে সেতুমন্ত্রীর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্রিফ করেন তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এই বোর্ডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফিলিপ কো। হৃদরোগে আক্রান্ত ওবায়দুল কাদেরকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সোমবার বিকেলে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। এরপর তার চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে পাঁচ সদস্যের এই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
মেডিকেল বোর্ডের ব্রিফিং শেষে তাদের বক্তব্যের আলোকে ডা. আবু নাসার রিজভী জানান, বিদেশি চিকিৎসকরা বলেছেন, সেতুমন্ত্রীকে বাংলাদেশে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখন তার অবস্থা স্থিতিশীল। তবে কিডনিতে কিছু জটিলতা রয়েছে। রক্তেও ইনফেকশন আছে। এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণের পর তার বাইপাস সার্জারি করা হবে। ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে যাচ্ছে দাবি করে তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান ডা. রিজভী।
ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা কাদের, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও নিজাম হাজারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদসহ সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা।
রোববার ভোরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওবায়দুল কাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে এবং একটিতে তাৎক্ষণিকভাবে রিং পরানো হয়। এরপর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ঘণ্টা দুয়েক পর কাদেরের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এ সময় তাকে দেখতে হাসপাতালের যান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসপাতালে ভিড় জমান আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির সিনিয়র নেতারাও তার খোঁজ নিতে হাসপাতালে যান। সোমবার ভারতের বিখ্যাত চিকিৎসক দেবী শেঠি বাংলাদেশে এসে কাদেরের শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। ওই দিন বিকেলেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে সিঙ্গাপুরে নিয়ে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
No comments:
Post a Comment